ছায়াবীথি
ছায়াবীথি
সাবরুনা আহমেদ
‘‘এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে
এসো কর স্নান নব ধারা জলে’’
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ইডেন মহিলা কলেজের সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রটির নাম ‘‘ছায়াবীথি’’ শিক্ষার্থীদের সুপ্ত নান্দানিক সত্তাকে জাগ্রত ও বিকশিত করতে ছায়াবীথি এক অনন্য ভূমিকা পালন করে। তাদের মেধা ও মননে সুরের অমিয় ফল্গুধারা এনে দেয় ছায়াবিথী। সংস্কৃতি চর্চা একজন শিক্ষার্থীকে সৃজনশীল সত্তায় সমৃদ্ধ ও প্রত্যয়ী করে গড়ে তোলে। তাই বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি তাদের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলেিত সক্রিয় অংশগ্রহনের ও নিয়মিত অনুশীলনের উৎসাহ দেয় ছায়ারীথি। নবীন প্রজন্মকে সঠিক পথের দিক নির্দেশনা দিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক জীবনবোধ তৈরি করতে সংস্কৃতি চর্চার কোন বিকল্প নেই। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই ছায়াবীথির পথচলা শুরু।
২০০৪ সালে ছায়াবীথির জন্ম হয়। এর পশ্চাতে যাদের নাম সর্বাগ্রে উল্লেখ করতে হয়, তাঁরা হলেন ইডেন মহিলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর রওশন আরা রশিদ, অধ্যক্ষ প্রফেসর জাহানারা বেগম, অধ্যাক্ষ প্রফেসর খুরশীদ জাহান হক, অধ্যক্ষ প্রফেসর মিনুফার চৌধুরী, অধ্যক্ষ প্রফেসর দিলারা হাফিজ, অধ্যক্ষ প্রফেসর জাহান-ই গুলশান, অধ্যক্ষ তাহমিনা হোসেন, প্রফেসর দেওয়ান ইউনুছ আলী, প্রফেসর সামসাদ বেগম, জনাব সুজিত নারায়ন কোর, ড. পূরবী রানী সমাদ্দার, জনাব মোছাঃ তছলিমা খাতুন, জনাব সুলতানা সাদেক, জনাব জহুরুল হক এবং আরো অনেকে। ৫নং ভবনের নীচ তলায় একটি কক্ষে ছায়াবীথির কার্যক্রম শুরু হয়। ছায়াবীথি নামটি তৎকালনি বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর তাহমিনা হোসেনের দেওয়া। প্রফেসর দিলারা হাফিজ এর উদ্যোগে ছিল যথেষ্ট প্রশংসনীয়। এর কাঠমোপুনর্বিন্যাসের কৃতিত্ব দিতে হয় প্রাক্তক অধ্যক্ষ ড. স্বপ্না রায়কে। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ প্রফেসর মাহফুজা চেধুরী ছায়বীথিকে সুবিন্যাস্ত করএত ভূমিকা রাখেন। অধ্যক্ষ প্রফেসর হোসেন আরা ছায়াবীথিকে সুসজ্জিত করার জন্য অনুধাবন প্রদান করেন এবং সার্বিক সহযোগীতায় এর নবরূপায়ন হয়।
ছায়াবীথিতে মাসিক ২৫০ বেতনে নিয়মিত সপ্তাহে দুইদিন করে গান ও নাচের ক্লাস নেওয়া হয়। গানের তালিম দেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান জনাব দেওয়ান ইউনুছ এবং জনাব জহুরুল হক নৃত্য প্রশিক্ষনের দায়িত্বে আছেন এই কলেজেই ইতিহাস বিভাগে প্রাক্তন ছাত্রী অর্পোনা হাই তন্দ্রা তবলায় নিয়মিত ভাবে সহযোগীতা করেন খ্যাাতিমান তবলা বাদক। এছাড়া এখানে দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা আক্তার তত্ত¡াবধানে সাপ্তাহে একদিন নিয়োমিত আবৃত্তি চর্চা হয়। আর আমি সাবরুনা আহমেদ ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর হিসেবে সাপ্তাহে একদিন বির্তক ও শুদ্ধ চর্চার অনুশীলন করাই। কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি কমিটির ছায়াবীথির সকল কার্যক্রম সুচারু ভাবে পরিচালনা ও মনিটরিং এর দায়িত্বে দিয়েছেন। ছায়াবীবিথির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন জনাব সাবারুনা আহমেদ (আহবায়ক) জনাব সুলতানা বেগম, (সদস্য), জনাব ড. তাসলিমা খাতুন (সদস্য), জনাব শামীমি আক্তার (সদস্য), জনাব শামিমা সুলতানা, সদস্য, জনাব, মরিয়ন বেগম, সদস্য।
কলেজে প্রতি বছর সাংস্কৃতিক সপ্তাহ রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, বার্ষ দিবস, ও নববর্ষ ইত্যাদি। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে উৎযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানগুলোতে ছায়াবিতী শিক্ষার্থী শিল্পীদের স্বর্তষ্ফুর্ত অংশগ্রহন ও উজ্জ্বল উপস্থাপনা লক্ষ্যনীয়। উল্লেখ্য শিক্ষার্থীদের এই সাংস্কৃতিক পদচারনায় কলেজ অঙ্গনেই সীমাবদ্ধ নয়, তাদের সৃজনশীল প্রতিবার স্বীকৃতি আসে বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায়। গান, নাচ, বিতর্ক ও আবৃত্তিতে তাদের বিভিন্ন অর্জন আমাদের গর্বিত করে। ইডেন কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিম ফাতেমা পিয়াল জাতীয় পর্যায়ে আবৃতি প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ায় গৌরব অর্জন করেছে। কলেজে বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সামসুন নাহার এবং উপাধ্যক্ষ প্রফেসর তহমিনা আক্তার এর সুচিন্তিত নির্দেশনা আন্তরিকতা ও অনুপ্রেরনায় ছায়াবিত্তি আজ আরও ঋদ্ধ ও গতিশীল। আমরা ছায়াবিত্তি পরিবার তাদের এই অনুকুলে কৃতজ্ঞ ও অভিভুত পরিশেষে পরবর্তী প্রজন্ম ইডেন কলেজের সাংস্কৃতিক ঐতিয্য ধরে রাখতে পারে সেই লক্ষে ছায়াবিত্তি উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করছি।